“প্রেমের বিষয়ে আমি খুব বোরিং”:ঐন্দ্রিলা বোস
তার জন্ম ও বড় হয়ে ওঠা মালদার ইংলিশ বাজারে।সেখানকার বারলো গার্লস হাই স্কুল থেকে স্কুলিং কমপ্লিট করার পর উচ্চ শিক্ষার জন্য চলে আসেন কলকাতায়।কলকাতার বিদ্যাসাগর কলেজে ভর্তি হন ইংরেজি অনার্স নিয়ে।ছোট থেকেই নাচ,আবৃত্তি করতেন। কলকাতায় কলেজে পড়ার সময় বন্ধুদের কথায় নাম দেন পি.সি.চন্দ্র গোল্ড লাইফ ডিভাতে।সেই বিউটি পেজেন্টে তিনি হয়ে গেলেন ফার্স্ট রানার আপ।হয়ে গেলেন সেই বছরের পুজোর ফেস।চারদিকে তার ছবি দিয়ে হোর্ডিং।হোর্ডিং-এর ছবি দেখেই সুযোগ চলে আসে মেগা।স্বপ্নের মতো তার প্রথম ধারাবাহিক ‘স্বপ্ন উড়ান’-এ একদম নায়িকা।বিপরীতে টলিউডের জনপ্রিয় অভিনেতা রাহুল অরুনোদয় বন্দ্যোপাধ্যায়।…তিনি ঐন্দ্রিলা বোস।আপনাদের সকলের প্রিয় মেগা ধারাবাহিক ‘মন ফাগুন’-এর প্রিয়াঙ্কা।
ঐন্দ্রিলা সাক্ষাৎকার পর্বের শুরুতে জানালেন,”আমার জার্নিটা একদম স্বপ্নের মতো।যেন আমি স্বপ্নের মধ্যেই আছি।আমার মনে হয় প্রত্যেকটি মেয়ে,যারা ছোট শহর থেকে কলকাতা মহানগরীতে আসে নিজেদের স্বপ্ন নিয়ে তাদের কাছে এই জার্নিটা ভীষণ স্পেশাল হয়।তেমনি আমার কাছেও ভীষণ স্পেশাল।আমি ছোট থেকে সোশ্যালি অ্যাকটিভ ছিলাম।মালদায় থালার সময় বিভিন্ন প্রতিযোগিতায় অংশগ্রহণ করতাম,সেই সময় টুকটাক ছোট ছোট জায়গায় সঞ্চালনাও করতাম।ওখানকার একটা গ্রাউন্ড চ্যানেলে সঞ্চালনাও করতাম।এইট নাইনে পড়ার সময় থেকেই শুরু।টিভিটা আমার কাছে খুব আকর্ষণীয় জিনিস ছিলো।ছোট থেকে যখন টিভিতে কোনো শো দেখতাম নিজের মনের মধ্যে একটা স্বপ্ন বুনতাম।যখন মাধুরী দীক্ষিতের অভিনয় দেখতাম মনে হতো ইস আমিও যদি অভিনয় করতে পারতাম!সেই একটা স্বপ্ন নিজের মধ্যে ছিলই।আমি একটা জিনিস ছোট থেকে বিশ্বাস করতাম তুমি যদি মন থেকে কিছু চাও অবশ্যই তুমি সেটা পারবে এবং পাবে।সেটাই মনের ইচ্ছে ছিল, আকাঙ্খা ছিল এবং চেষ্টা ছিল। মালদায় স্কুলিং কমপ্লিট করে কলকাতায় আসি পড়াশুনার জন্য।সেই সময় বিভিন্ন বিউটি পেজেন্টে নাম দিতাম।তারপর একটাতে ক্রাক করলাম।এরপর বিভিন্ন জায়গায় অডিশন দিতে দিতে সুযোগ পাই ‘স্বপ্ন উড়ান’-এ।তারপর দর্শকদের ভালোবাসায় পরের পর ধারাবাহিক করে চলেছি।সবার মন জয় করতে পারছি,সবার ভালোবাসা পাচ্ছি এটাই প্রাপ্তি।আর আমি যতটুকু হয়েছি,যা করতে পেরেছি সেটা আমার মেয়ের জন্য।মা ছোট থেকেই আমাকে সাপোর্ট করে গেছেন।পরে অবশ্য বাবাও সাপোর্ট করেছেন।আমার বাড়ি কালচারালি রিচ।তারা সবসময়ই পাশে থেকেছেন”
‘স্বপ্ন উড়ান’-এর পর ঐন্দ্রিলা অভিনয় করেন ‘শুভদৃষ্টি’-তে।আর ‘শুভদৃষ্টি’ করার সময়ই অভিনেত্রীর সঙ্গে বন্ধুত্ব হয় টেলিভিশনের আরেক জনপ্রিয় অভিনেত্রী ঐশ্বর্যা সেনের সঙ্গে।সেই বন্ধুত্ব এখনও অটুট।’শুভদৃষ্টি’র পর ঐন্দ্রিলা অভিনয় করেন ‘আলোছায়া’ ধারাবাহিকে ছায়ার চরিত্রে।
ঐন্দ্রিলা এখন মন জয় করছেন ‘মন ফাগুন’ ধারাবাহিকে প্রিয়াঙ্কার চরিত্রে।খুব শীঘ্রই অভিনেত্রীকে দেখা যাবে ‘স্টার জলসার’ নতুন মেগা ধারাবাহিক ‘সাহেবের চিঠি’-তে একটা গুরুত্বপূর্ণ চরিত্রে।
প্রথম মেগাতে একদম লিড চরিত্রে কিন্তু তারপর গুরুত্বপূর্ণ চরিত্রে থাকলেও লিড নয় এর জন্য অভিনেত্রীর কোনো আক্ষেপ আছে কিনা জিজ্ঞাসা করতেই অভিনেত্রীর উত্তর,”আক্ষেপ হতো যদি অভিনয় না করতাম।আমার কাছে আমার গোলটা ভেরী ক্লিয়ার।আমি যেটা করছি সেটা ভালোবেসে করছি।আর ভালোবাসার জিনিসটা আমার কাছে আছে।হাজারো হাজারো মানুষ আছেন যারা স্বপ্ন দেখেন কিন্তু স্বপ্ন পূরণ করতে পারেন না।কিন্তু আমি আমার স্বপ্ন পূরণ করতে পারছি এবং আমি যাদের জন্য কাজ করছি তারা আমায় ভালোবাসছেন।আমি যেটা করছি মানুষ সেটা মনে রাখছেন।এটা আমার কাছে সবচেয়ে বড় পাওয়া।”
ইতিমধ্যে অভিনেত্রী ফিচার ফিল্মে ডেবিউ করে ফেলেছেন।বিক্রম আদিত্য অর্জুনের পরিচালনায় ‘মৃত্যুর রং ধূসর’ ছবিতে ঐন্দ্রিলাকে একজন পুলিশ অফিসারের চরিত্রে দেখা যাবে।
অভিনেত্রী কথায় কথায় জানালেন,”আমি আমৃত্যু অভিনয় করতে চাই।অভিনয়ের প্রত্যেকটা প্লাটফর্মে নিজেকে উজাড় করে দিতে চাই।”
অভিনেত্রীর মনের মানুষ সম্পর্কে প্রশ্ন করলে অভিনেত্রী জানালেন,”এ বিষয়ে আমি খুব বোরিং।আমি একদম সিঙ্গেল মানুষ।একা থাকতে আর পরিবারের সঙ্গে সময় কাটাতেই পছন্দ করি।”
অভিনেত্রীর দক্ষিণ ভারতে এবং বলিউডে অভিনয় করার প্রচণ্ড ইচ্ছে আছে।অভিনেত্রী সাক্ষাৎকার পর্ব শেষে জানালেন,”লক্ষ্যে অবিচল থেকে এগিয়ে চলেছি।”
সাক্ষাৎকার: রামিজ আলি আহমেদ
চিত্ৰগ্রাহক: বাবান মুখার্জী
ওয়ার্ডড্রোব ও স্টাইলিং: জিৎ সত্যা
রুপসজ্জা: সৌমেন সেনগুপ্ত
কেশসজ্জা: রণিতা চন্দ্র
সিনেমাটোগ্রাফার: শুভজিৎ ভৌমিক