এক্সক্লুসিভ ফটোশুটে জ্যোতিকা জ্যোতি
জ্যোতিকা জ্যোতি ২০০৪ সালে বাংলাদেশে লাক্স-আনন্দধারা ফটোজেনিক প্রতিযোগিতায় সেরা দশে স্থান করে নিয়েছিলেন ।
জন্ম এবং শিক্ষা: জ্যোতিকা জ্যোতির জন্মস্থান ময়মনসিংহের গৌরীপুরে। তাঁর লেখাপড়া ইংরেজি সাহিত্যে । আনন্দমোহন বিশ্ববিদ্যালয় থেকে ইংরেজিতে মাস্টার্স করেছেন জ্যোতি । ওই সময় যোগ দেন ময়মনসিংহের বহুরূপী থিয়েটারে । তবে এ নাট্যদলের হয়ে মঞ্চে ওঠার সুযোগ হয়নি তাঁর। জ্যোতিকা জ্যোতির পুরো নাম জ্যোতিকা পাল (জ্যোতি) । চার ভাইবোনের মধ্যে তিনিই বড়। বাবা নিতাই পাল একজন অবসরপ্রাপ্ত স্কুল শিক্ষক ।
অভিনীত চলচ্চিত্র: ২০০৫ সালে জ্যোতি অভিনীত প্রথম চলচ্চিত্র কবরী সারোয়ারের ‘আয়না’ । এরপর মুক্তি পেয়েছে তাঁর অভিনীত বেলাল আহমেদের ‘নন্দিত নরকে’।তানভীর মোকাম্মেলের ‘রাবেয়া’ ও ‘জীবনঢুলি’ চলচ্চিত্র দুটি ।মোরশেদুল ইসলাম পরিচালিত “অনিল বাগচীর একদিন।
মারিয়া তুষারের “গ্রাস”।এরপরই কাটাতারের সীমানা ভেঙ্গে আন্তর্জাতিক হয়ে ওঠেন।এপার বাংলার জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কারপ্রাপ্ত পরিচালক প্রদীপ্ত ভট্টাচার্যের ছবি ‘রাজলক্ষ্মী ও শ্রীকান্ত’-তে রাজলক্ষ্মী’র চরিত্রে জ্যোতিকা জ্যোতির অভিনয় উচ্চ প্রশংসিত হয়েছে। মাসুদ পথিক পরিচালিত ‘মায়া: দ্য লস্ট মাদার’ তার অভিনয় ভুয়সী প্রশংসিত হয়েছে।সম্প্রতি মুক্তি পেয়েছে নুরুল আলম আতিক পরিচালিত ‘লাল মোরগের ঝুঁটি’। দারুন প্রশংসিত হচ্ছে এই চলচ্চিত্রটিও।
জ্যোতিকা জ্যোতির প্রতিটি চলচ্চিত্রই বিভিন্ন ক্যাটাগরিতে জাতীয় চলচ্চিত্র পুরষ্কারসহ নানান আন্তর্জাতিক পুরষ্কার অর্জন করেছে।
জ্যোতি অভিনীত প্রথম স্বল্পদৈর্ঘ্য চলচ্চিত্রটির নাম ছিল ‘ব্রেক আপ’। ২০১০ সালের শুরুর দিকে ‘ব্রেক আপে’ অভিনয় করেছিলেন তিনি।এরপর ‘গর্ত -দ্য ট্রেঞ্চ অব ফিয়ার’ ‘কাঠগোলাপ’ , ‘বনফুল’ ‘পাড়ি’ এবং সত্যজিৎ রায় ফিল্ম ইনস্টিউটের দুটো ডিপ্লোমা ফিল্ম “ফাঁকি’ ও “ফার্নিচার”-এ অভিনয় করেন। দেশ বিদেশের বিখ্যাত সব চলচ্চিত্র উৎসবে উচ্চ প্রশংসিত হয়েছে এই স্বল্পদৈর্ঘ্যগুলোও।
উল্ল্যেখযোগ্য ধারাবাহিক নাটক: অনন্ত হীরার ‘স্বপ্নের পাঠশালা’ জ্যোতির প্রথম টিভি নাটক। তবে আলোচনায় আসেন “স্বপ্নচূড়া” ধারাবাহিকে অভিনয় করে। জ্যোতি অভিনীত কিছু জনপ্রিয় ও প্রশংসিত ধারাবাহিক নাটক হচ্ছে – ‘মোহনা’ ‘পালাবার পথ নেই’, ‘কলেজ রোড’ ‘আপন আপন খেলা’ ‘পিছুটান’ ‘রঙ্গিলা বাও’, ‘লাল অপরাজিতা’ ‘ভজকট‘ ক্রুশকাঠের কন্যা’ ‘মৃত্যুসখীগন‘ ‘তবুও জীবন’ আলোকনগর’ ‘দহন’ ‘শেষ অধ্যায়’, ‘গুলশান এভিনিউ’ ‘অগ্নিপথ’ ‘একটা কিনলে একটা ফ্রি’ ‘একদিন প্রতিদিন, ‘হাতের রেখা কথা বলে’ ‘বৈকুন্ঠের উইল’ ‘গিনেস বুকে নাম’ ‘হাঁটাবাবা’ ‘রেগে গেলেন তো হেরে গেলেন ‘মায়ের দোয়া পরিবহন’, ‘ও চাঁদ ‘ ‘মানুষ বদল’, ‘রাতের গল্প’, ‘উজান গাঙ্গের নাইয়া’ ‘গৃহদাহ’, ‘গ্রামের নাম সুবর্ণপুর’ ইত্যাদি ।
উল্লেখযোগ্য একক নাটক:
‘ঝড়াক্রান্ত শেফালী গাছ, ‘অগ্নিগিরি’ ‘দেনা পাওনা’ ‘দান প্রতিদান’ ‘সম্পত্তি সমর্পন’ ‘অন্ধের বউ’ ‘তার কোন নাম নেই, ‘পুশিং সেল’ ‘দুর্গা’ ‘রেবা’‘অন্ত্যেষ্টিক্রিয়া’
‘কোথায় পাবো তারে‘ ‘স্বপ্নবুনন, ‘একমুঠো ভালোবাসা’ ‘নুপুর’ ‘বখাটে’ ‘স্বপ্নের আকাশে ঘুড়ি’ ‘সে আছে সে নেই’ ‘জাগরণের রংটা ধূসর ছিলো, ‘চিঠি’ ’মুক্তাহীন ঝিনুক, ‘ভালোবাসায় লাল পিঁপড়া’ ‘স্বপ্ন দেখার সাহস, ‘অপর পৃস্ঠায় দ্রস্টব্য’ ‘মুক্তি‘ ‘এক কুঠরী দুই দরজা’, হাইয়াই শহরের গল্প’ ‘পোর্ট্রেট’ ‘অচল’ ‘গন্তব্যের দিকে’ ‘জয়গুনের জয়গান’ ‘জামাই অভিযান’, ‘চক্রবলয়’ ‘ওয়ার্ড নং ৭৭’ ‘জুয়াড়ী’ ‘পাখির ডানা’ ‘শিল্পী’ ‘শিউলীমালা’ ‘এক পায়ে নুপুর’ ‘মুকুটহীন নবাব’ ‘বাবার মানচিত্র’ ‘ধারা নং ৪২০’, ‘বউমেলা’ ‘ছবির মানুষ’’উত্তর বসন্ত’ ইত্যাদি।
একক ও ধারাবাহিক মিলিয়ে তিন শতাধিক টেলিভিশন নাটকে অভিনয় করেছেন তিনি। তবে এখন চলচ্চিত্রেই নিয়মিত।দেশ দেশের বাইরে সমানতালে কাজ করতে চান তিনি।
উপস্থাপনা: ২০১৩ সালের ফেব্রুয়ারী মাসে এটিএন বাংলার জন্য ‘ভ্যালেন্টাইন স্পেশাল কমেডি আওয়ার’ নামের অনুষ্ঠানের মাধ্যমে উপস্থাপনায় যাত্রা শুরু করেন ।এছাড়াও বিশেষ দিবস উপলক্ষ্যে বেশকিছু বিশেষ অনুষ্ঠান উপস্থাপনা করেন।
প্রিয় খাবার: মিষ্টি জাতীয় খাবার পছন্দ করেন জ্যোতিকা।সব্জি ,সালাদ আর জুসও রয়েছে পছন্দের তালিকায়।তবে চকলেট আর কফি ছাড়া চলেইনা। মায়ের হাতের প্রিয় রান্না,পিঠা-পুলি খুব প্রিয়। ফলের ভিতর আম, লিচু আর চেরীফল প্রিয়।
প্রিয় মানুষ: মা, বাবা।
এহেন ভার্সাটাইল অভিনেত্রী জ্যোতিকা জ্যোতি সম্প্রতি কলকাতায় এসেছিলেন।বহু ব্যস্ততার মধ্যেই সময় বের করলেন ‘আনন্দদিন’ ম্যাগাজিন (ডিজিটাল)-এর জন্য এক্সক্লুসিভ ফটোশুটের।পূর্ব নির্ধারিত সময় অনুযায়ী পড়ন্ত বিকেলে টিম আনন্দদিন পৌছালো দক্ষিণ কলকাতায় রিজেন্ট প্লেসে জ্যোতিকার বাসভবনে।সেখানে তিনি একে একে বিভিন্ন লুকে আনন্দদিন-এর প্রধান চিত্রগ্রাহক বাবান মুখোপাধ্যায়ের ক্যামেরায় ধরা দিলেন।